এলোভেরা দিয়ে ব্রন দূর করার উপায় ও এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
ঘৃতকুমারীর বৈজ্ঞানিক নাম ( Alov vera),এটি একটি এলো পরিবারের উদ্ভিদ। এটি দেখতে
অনেকটা আনারস গাছের মতো কাঁটাওয়ালা। এর পাতাগুলো পুরু এবং পাতার দুই ধারে করাতের
মতো কাটা ভিতরে লালার মত আঠালো পিচ্ছিল রস থাকে। এতে প্রায় বিশ ধরনের খনিজ
পদার্থ রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন A,B1,B2, B6,B12,C, এবংE,।
অ্যালোভেরা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের রূপচর্চা হয়ে থাকে। বিশেষ করে ব্রণ দূর করতে ও
তক ফর্সা করতে এলোভেরা ব্যবহার করা হয়। অনেকেই ব্রণ দূর করতে এটি খাবারের সাথে
গ্রহণ করে থাকে যদিও এটার কোন বৈজ্ঞানিক কোন ভিত্তি নেই। এবং ফর্সা হওয়ার কাজে
ব্যবহার করে থাকেন।
ভূমিকা
এলোভেরা বা ঘৃতীকুমারী এক ধরনের রসালো প্রকৃতির উদ্ভিদ। যা যুগ যুগ ধরে রূপচর্চা
ও বিভিন্ন ভেজোজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অ্যালোভেরাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের
ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ। অ্যালোভেরাতে ভিটামিন বি সি এবং ই থাকায় রূপচর্চায়
একটি জনপ্রিয় উপাদান হিসাবে ব্যবহৃত হয়। অ্যালোভেরা অনেকেই ব্রণ দূর করতে এবং
রূপচর্চায় বিশেষ করে ফর্সা হওয়ার কাজে ব্যবহার করে থাকেন ।
অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চা।
অ্যালোভেরা সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় রূপচর্চার কাজে মুখের কালো দাগ এবং
ব্রণ দূর করতে ব্যবহৃত হয়। নিচে অ্যালোভেরার বিভিন্ন ব্যবহার দেওয়া হল।
ত্বকের যত্নে এলোভেরা
অ্যালোভেরা বা ঘৃতিকুমারীতে রয়েছে ভিটামিন এ বি এবং ই যা ত্বকের জন্য খুবই
উপকারী।অ্যালোভেরার ভিতরে রয়েছে এক ধরনের পিচ্ছিল আঠালো পদার্থ যা ত্বকের
জেল্লাই বাড়াই এবং ত্বকের রুক্ষ ও শুষ্ক ভাব দূর করে। বরফের টুকরো এবং
অ্যালোভেরা জেল একসঙ্গে নিয়ে তোকে ম্যাসাজ করলে জালাপোড়া ভাব কমে যায় খুব সহজেই।
চুলের যত্নে এলোভেরা
আমরা বিভিন্ন কাজে বাহিরে যাই এতে করে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধুলাবালি লেগে যাই।
বিশেষ করে চুলে লেগে থাকে। কিন্তু সব সময় পার্লারে যাওয়ার মত সময় থাকে না।
এক্ষেত্রে ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলের যত্নে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এর
এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও এন্টিফাঙ্গাল উপাদানের কারণে চুলের শুষ্ক ভাব ও খুশকির
সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এলোভেরা রসের সঙ্গে আমলকির রস মিশিয়ে চুলে লাগালে
চুলের উজ্জ্বলতা বেড়ে যায় ।
এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
অনেকেই জানতে চান কিভাবে ফর্সা হওয়া যায়। তাই এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা
করব।কিভাবে এলোভেরা দিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে ফর্সা হওয়া যায় সেটা নিয়ে আলোচনা
করব।
ফেসপ্যাক তৈরির উপায়
একটি পাত্রে দুই চা চামচ আটা, আধা চা চামচ হলুদ গুড়া এবং তিন চা চামচ এলোভেরা জেল
মিশিয়ে ভালো করে সবগুলো উপাদান মিক্স করে নিতে হবে। তারপর মিশ্রণটি আপনার তকে
ভালো করে ঘষে লাগিয়ে নিন। এই ফেসপ্যাকটি আপনার ত্বকের কালো দাগ দূর করতে এবং
উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে এনে ফর্সা করে তুলতে খুবই কার্যকরী একটি প্রাকৃতিক উপাদান।
উপকরন ও প্রস্তুত প্রনালী
কাচা দুধ,বেসন,মুলতানি মাটির প্যাক
এই প্যাকটি যাদের ত্বক অত্যান্ত তৈলাক্ত তাদের জন্য বেশ কার্যকারী । কাচা দুধে
থাকে ল্যাকটিকএসিড যা প্রাকৃতিক ব্লিজের কাজ করে এবং ত্বকের রংকে হালকা
করে।অন্যদিকে বেসন ও মুলতানি মাটি ত্বকের তৈল্কততা দুরকরে এবং ত্বককে গভীর ভাবে
পরিষ্কার
উপকরন ও প্রস্তুত প্রণালী
কাচা দুধ ও কলার প্যাক
এটার জন্য দরকার অর্ধেক পাকা কলা ও পরিমান মত (প্রায় ২ চা চামচ) কাঁচা দুধ। কলা
ভালোভাবে ম্যাস করে নিয়ে এর সাথে কাঁচা দুধ মিশিয়ে থকথকে করে নিতে হবে। এই
প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিটে রাখতে হবে। তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার
করতে হবে।এই প্যাকটি ত্বককে মসৃণ করার পাশাপাশি ত্বককে উজ্জ্বল করে তুলে।
উপকরণ ও প্রস্তুত প্রণালী
কাঁচা দুধ, পেঁপে ও মধুর প্যাক
এই প্যাক্টি মূলত বয়স্কদের জন্য। যাদের ত্বকে হালকা রিংকেল পড়ে গেছি তারা এই
প্যাকটি থেকে অনেক উপকার পেতে পারেন। দুই টুকরো কাঁচা পেঁপে টুকরো টুকরো করে ভালো
ভাবে ম্যাশ করে নিতে হবে। এর সাথে মিশাতে হবে ২ চা চামচ কাঁচা দুধ ও ৬ চা চামচ
মধু।এটি মুখে লাগিয়ে ৫-৬ মিনিট রাখার পরে মুখ পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
উপকরণ ও প্রস্তুত প্রণালী
কাচা দুধ,মধু ও লেবুর রসের প্যাক
পরিমাণ মত কাঁচা দুধ মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে ক্রিমের মতো করে ফেলতে হবে। এটা একটা
প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসাবে কোন ধরনের ক্ষতি ছাড়াই ত্বকের রংকে হালকা করে।২চা চামচ
কাচা দুধের সাথে ১ চা-চামচ মধু ,১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ৫-২০
মিনিট রাখতে হবে। এরপর পানি দিয়ে মুখ ভালো ভাবে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। আপনার
ত্বক এতো উজ্জ্বল হবে যে আপনি নিজেই অবাক হয়ে জাবেন।
উপকরণ ও প্রস্তুত প্রণালী
মধু ও কাঁচা দুধ
এগুলো যদি আপনার কাছে কষ্ট মনে হয় তাহলে আপনার জন্য একটি সহজ উপায় রয়েছে। শুধু
কাঁচা দুধ হাতে নিয়ে মুখেলাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন।এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে
ফেলুন। আপনি প্রতিদিন যদি এই কাজটি করতে পারেন তাহলে আপনার ত্বক আস্তে আস্তে
উজ্জল হয়ে যাব।
রাতে এলোভেরার ব্যবহার
অনেকেই জানতে চান যে এলোভেরা রাতে ব্যবহার করা যাবে কিনা বা ব্যবহার করলে কি কি
উপকার হতে পারে। আজকে আমি এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করব। অ্যালোভেরা জেল রাতে
ব্যবহার করলে ত্বকের জন্য বেশ উপকার হতে পারে যেমন ত্বককে ময়শ্চারাইজ
করে, ত্বককে নরম এবং উজ্জ্বল করে । অ্যালোভেরা জেলে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকায়
ত্বককে হাইড্রেট এবং ময়েশ্বারাইজ করতে সাহায্যে করে।এটি নাইট ক্রিমের পরিবর্তে
ব্যবহার করা যেতে পারে। রাতে এটি ব্যবহার করলে আপনার ত্বককে নরম এবং কমল রাখতে
সাহায্য করবে।
অ্যালোভেরা দিয়ে ব্রণ দুর করার উপায়
শরীরে যে কোন জায়গায় ব্রণ হতে পারে। তবে সবচেয়ে বেশি সাধারণত মুখে হয়ে থাকে।
তাই মানুষ ব্রণ নিয়ে বেশি চিন্তা করে। কারণ মুখে ব্রণ হলে সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে
যায়। তাই মুখে ব্রণ হলে বেশি চিন্তিত হয়ে পড়ে। আমাদের শরীরে থাকা
লোমকোপগুলো যখন ধুলাবালি, মৃত চামড়া বা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বন্ধ হয়ে যায় তখন
সেখানে ব্রণ হয়।
প্রায় প্রতিটি লোমকুপে থাকে একটি করে তুল গ্রন্থী এই গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত
তেল ধুলাবালির সাথে মিশে লোমকূপ বন্ধ করে দেয়, তখন সেখানে ব্যাকটেরিয়া জমে
ব্রণের সৃষ্টি করে। এছাড়াও বিভিন্ন কারণে ব্রণ হতে পারে। নিচে সেই কারণগুলো
দেওয়া হল।
- হরমোনাল পরিবর্তন
- তৈলাক্ত ত্বক
- অপর্যাপ্ত ঘুম
- মানসিক চিন্তা
- পানি কম খাওয়া ইত্যাদি
ঘরোয়া পদ্ধতিতে অ্যালোভেরা দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়
অ্যালোভেরা বা ঘৃতি কুমারী ( Succulent) পরিবারের একটি উদ্ভিদ। অ্যালোভেরার পাতা
আনারসের পাতার মতোঅনেকটা ধারালো । এই পাতার ভিতরে থাকে লালার মতো পিচ্ছিল পদার্থ।
এর পাতার ভিতরে থাকে পরিষ্কার জেলি, ত্বকের জ্বালাপোড়া ভাব কমানোর জন্য
সাময়িকভাবে ব্যবহৃত হয় এবং অনেকে এটি ব্রণের চিকিৎসায় ব্যবহার করে থাকে। যদিও
এটার কোন প্রাতিষ্ঠানিক কোনো প্রমাণ নেই। হালকা ব্রণের জন্যএটি ব্যবহার করা গেলেও
বেশি ব্রণের ক্ষেত্রে এর ব্যবহার খুব বেশি কার্যকর হয় না।
উপকরণ ও প্রস্তুত প্রণালী
দারুচিনি মধু ও অ্যালোভেরা মিশ্রণ
২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরার সাথে ১/৪ চা চামচ লেবুর রস নিতে হবে। এরপর এলোভেরা ও
লেবুর রসের অনুপাত ৮ঃ১ নিতে হবে। কিছু দারুচিনি গুড়া নিতে হবে ১ চামচ মধু নিতে
হবে।এই উপাদানগুলো একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে।এই পেষ্টটি মুখে লাগিয়ে
৫-১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে ব্রণ দূর করতে সাহায্য
করে।
লেখকের মন্তব্য
আমার ওয়েব সাইট(www.Abararbd.com)এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট লিখে থাকি ।
যেমন চিকিৎসা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি , খাদ্য, ফল, শিক্ষা ইত্যাদি। আমি মনে
করি যে আমি যে বিষয়গুলো জানি সেগুলো আমার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সকলের মধ্যে
ছড়িয়ে দিতে। যাতে করে আমার এই পোস্টগুলোর মাধ্যমে আপনারাও উপকৃত হতে পারেন।
আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি অ্যালোভেরার বিভিন্ন গুনাগুন।
অ্যালোভেরার ব্যবহার,অ্যালোভেরা দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়, কিভাবে ফর্সা
হওয়া যায় ইত্যাদি বিষয়। আশা করি আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা উপকৃত
হয়েছেন। আপনারা যদি বিন্দু পরিমাণ উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আমার এই পোষ্টিী লেখা
সার্থক হবে। আমার এই লেখার মাধ্যমে আপনারা যদি উপকৃত হয়ে থাকে, তাহলে আপনার
বন্ধু বান্ধ,সহপাঠী, নিকট আত্নীয়দের মধ্যে শেয়ার করবেন জাতে করে তারাও উপকৃত হতে
পারে। সবাইকে অনেক ধন্যবাদ ধৈর্য্য সহকারে আমার এই পোস্টটি পড়ার জন্য। আল্লাহ
হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url