ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা ও উপকারিতা
মোবাইল ফোন আধুনিক বিশ্বের এক বিস্ময়কর আবিষ্কার।মোবাইল ছাড়া আমাদের আধুনিক জীবন কল্পনা করা যায়না।তবে প্রতিটা জিনিসের ভাল ও মন্দ দুইটা দিক রয়েছে।তেমনি মোবাইলের ও উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে।বিশষকরে ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা ও উপকারিতা রয়েছে অনেক।
মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা বিশেষ করে ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা ও উপকারিতা জানতে হলে আমার এই পোষ্টি প্রথম থেকে শেষপরযন্ত মনোযোগ সহকারে ভাল্ভবে পড়তে হবে।তাহলে আশাকরি আপনার কাঙ্খিত বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
ভুমিকা
মোবাইল ফোন আধুনিক যুগে মানব জীবনের এক অনিবার্য বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে।মোবাইল ফোন ছাড়া আমাদের আধুনিক জিবন কল্পনা করা যায়না।মোবাইল ফোন আমাদের দৈন্দিন জীবনে কিকি কাজে আসে বা মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা দিক গুলো কি? বিশেষ করে ছত্র জিবনে মোবাইল ফোনের প্রভাব কী ইত্যাদি বিষয় আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
সূচিপত্র
- মোবাইল ফোনের উপকারিতা
- মোবাইল ব্যবহার সুবিধা ও অসুবিধা
- বাচ্চাদের স্মার্টফোন ব্যবহারের অসুবিধাসুমহ ।
- দৈনন্দিন জীবনে মোবাইল ফোনের প্রভাব।
- ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা ও উপকারিতা।
- শিক্ষার্থীদের ওপর মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল ও কুফল ।
মোবাইল ফোনের উপকারিতা
প্রতিটা জিনিসের ভাল ও মন্দ দুইটা দিক রয়েছে। তেমনি মোবাইল ফোনের ও ভাল মন্দ দুইটা দিক রয়েছে।একবিংশ শতাব্দিতে এসে ।আমাদের দৈন্দিন জীবন মোবাইল ছড়া কল্পনা করা যায়না।বর্তমানে ইন্টানেটের যুগে শিক্ষা থেকে শুরু করে কৃষি কাজ পর্যন্ত মোবাইলের উপর নির্ভরশীল । এখন ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায় ।
বিশেষ করে ছত্র ছত্রীরা মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় ক্লাস ও পরীক্ষা দিতে পারতেছে খুব সহজেই।এছাড়া কৃষকরা বিভিন্ন কৃষি পণ্য উৎপাদন করে তাদের উৎপাদিত পন্য মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে বিক্রয় করতে পারে খুব সহজেই।
মোবাইলের ব্যবহার সুবিধা ও অসুবিধা
মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা সমূহ
মোবাইল ফোন ব্যবহারের অনেক সুবিধা রয়েছে। যেমন খুব সহজেই যোগাযোগ করা যায়, তথ্য আদান প্রদান করা যায়, বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছানো যায় খুব দ্রুত।বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীরা ঘরে বসে ইন্টারনেট ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় ক্লাস করতে পারে। এবং একে অপরের সাথে খুব সহজে যোগাযোগ করতে পারে।
ও প্রয়োজনীয় তথ্য মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পেয়ে থাকে। এতে করে ছাত্র-ছাত্রীরা নতুন নতুন জ্ঞান অর্জন করতে পারে। এছাড়াও স্মার্টফোনের উপকারিতা অনেক। যেমন আমরা ঘরে বসে অনেক কিছু ভিডিও দেখতে পারি, নিউজ শুনতে পারি ইত্যাদি।
কোন দুর্ঘটনা ঘটলে পুলিশ বা ফায়ার সার্ভিসকে কল করতে পারি। এতে করে পুলিশ বা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনা স্থানে দ্রুত পৌঁছাতে পারে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে।
মোবাইল ফোনের অসুবিধা সমূহ
মোবাইল ফোনে যেমন উপকারিতা বা সুবিধা রয়েছে তেমনি পাশাপাশি অপকারিতা বা অসুবিধা রয়েছে। এখন অনেক যুবক-যুবতী মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছে এবং অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে।বাচ্চা ছেলেমেয়েরা মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে । এতে করে তাদের ভবিষ্যৎ হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। এছাড়া অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের ফলে নতুন নতুন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
বাচ্চাদের স্মার্ট ফোন ব্যবহারের অসুবিধা
তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে স্মার্ট ফোন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসে পরিণত হয়েছে প্রতিটি পরিবারে। বিশেষ করে গত দুই বছরে করোনা মহামারীর সময়ে এর ব্যবহার বেড়েছে অনেক গুনে। এ সময়ে অনেক পিতামাতাই বা অভিভাবক তাদের সন্তানকে শান্ত রাখতে স্মার্ট ফোন তুলে দিয়েছে তাদের হাতে। দিনের অনেকটা সময় শিশুদের হাতে স্মার্টফোন থাকাই তারা মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে।
এতে করে শিশুদের অনেক শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হচ্ছে। আমরা জানি মোবাইলে রেডিয়েশন থাকে । মোবাইলের রেডিয়েশন এর প্রভাব গুলো প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে শিশুদের উপর প্রভাব বেশি । বিশেষ করে তাদের চোখের ক্ষতি করে।
স্মার্ট ফোন ব্যবহারের শিশুদের আটটি ক্ষতিকর দিক তুলে ধরা হলো।
১।টিউমার
অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে শিশুদের টিউমার হতে পারে। অনেকদিন ধরে শিশুদের উপর সেল ফোন বিকিরণের প্রভাব গুলো বোঝার ক্ষেত্রে ব্যাপক গবেষণা করা হয়েছে।শিশুরা এখন তাদের দেহের পরিবর্তন এবং বর্ধনের মধ্য দিয়ে চলছে। যেসব শিশুরা তাদের কানের কাছে ফোন রাখে,বিশেষ করে কান এবং মস্তিষ্কের অঞ্চলে আন্টি ম্যালিগন্যান্ট টিউমার হওয়ারঅনেক সম্ভাবনা দেখা গেছে।
প্রতিরক্ষামূলক আবরণ গুলো শিশুদের মধ্যে এখনো পাতলা বিশেষ করে মস্তিষ্কের মতো অঙ্গ গুলোর জন্য হাড় টিস্যু ইত্যাদি। তাই এই অঙ্গগুলো মোবাইল ফোন থেকে নির্গত ৬০%ভাগ রেডিয়েশন শোষণ করে। এই বিকিরণটি মানুষের শরীরে অনেক প্রভাব ফেলতে পারে, কখনো কখনো সরাসরি স্নায়ুতন্ত্র কেউ প্রভাবিত করে। Who বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটিকে একটি সম্ভাব্য কার্সিনোজেন হিসাবে ক্লাসিফিকেশন করেছে যেটা ক্যান্সারের সম্ভাব্য ঝুঁকি বহন করে।
২।মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপের সমস্যা
মোবাইল ফোন গুলোতে যোগাযোগের জন্য প্রাথমিকভাবে বৈদ্যুতিনচুম্বকীয় তরঙ্গ গুলি কাজ করে। এই তরঙ্গগুল সরাসরি খুব সহজেই শিশুদের মস্তিষ্কের অভ্যন্তরের অংশগুলোতে প্রবেশ করতে পারে কারণ তাদের মস্তিষ্কের রক্ষা ব্যবস্থা শক্ত হয় না। যার ফলে শিশুদের মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বা সমস্যায় পড়তে পারে।
৩।একাডেমিক বা পড়াশোনার ক্ষতি সাধন
অনেক শিশুই মোবাইল ফোনে কার্টুন দেখে বা গেম খেলে।এতে করে শিশুরা দিনে দিনে মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে। তাদের সাথে ফোন নিয়ে যায় তাদের স্কুল। স্কুল বিরতির সময়ে বা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে তারা মোবাইলে চ্যাট করতেছে বা গেম খেলতেছে। এই সমস্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এর ফলে শিশুরা পড়াশোনায় বা ক্লাসে মনোযোগ দিতে পারছে না। ফলে অনেক শিশুই পড়াশোনা থেকে ছিটকে পড়তেছে।
৪।বিদ্যালয়ে অন্যায় করা
এই স্মার্ট ফোনগুলো শিশুদের শুধু পড়াশোনা থেকেই বিরত করতেছে না তাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপের উপর ও ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। তারা বিদ্যালয়ে অনেক অন্যায় মূলক কাজের সাথে জড়িত হয়ে পড়ছে। তারা পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারতেছে না।ফলে অনেক শিশু ছিটকে পড়তেছে পড়াশুনা থেকে।
৫।ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে
শিশুরা স্মার্টফোন হাতে পেয়ে তাদের বন্ধুদের সাথে অনেক রাত পর্যন্ত মোবাইল ফোনে কথা বলে বা চ্যাট করে।যা সময়ের সাথে সাথে ক্লান্তি এবং অস্থিরতা সৃষ্টি কর।ফলে তারা ঘুমাতে পারে না । কম ঘুমও শিক্ষাজীবনকে অনেক সময় ব্যাহত করে। ফলে স্কুলে গিয়ে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে পারে না।
৬।মেডিকেল ইসু।
শিশুরা ফ্রি সময় মোবাইল ফোনে আসক্ত থাকার কারণে তারা শারীরিক ক্রিয়ায় অংশ নেয় নাএবং তাজা বাতাস পাই না। যা অন্যান্য অসুস্থতার ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয় । যার ফলে ডায়াবেটিক্স এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগ হতে পারে।
৭।মানসিক স্বাস্থ্য
বর্তমানে ইন্টারনেটের যুগে খুব সহজেই শিশুরা সাইবার বোলিংয়ের সংস্পর্শে আসতে পারে যারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাদেরকে হারাস করে এবং হুমকি দেয়। ফলে তারা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। এতে করে তারা হতাশাগ্রস্ত হয়।
৮।অনুপযুক্ত মিডিয়া
শিশুরা অল্প বয়সে মোবাইল ফোন হাতে পাই। ফলে অনেক সময় ভুল উদ্দেশ্যে মোবাইল ফোন ব্যবহার কর।এতে করে বিভিন্ন রকম গেম ছবি বা অন্যান্য ভিডিওগুলো দেখতে পাই এবং এটিকে অন্যের কাছে প্রেরণ করতে পারে।বন্ধুদের গ্রুপের মধ্যে শেয়ার করে। এতে করে তাদের মধ্যে রুচির পরিবর্তন আসে। ফলে তারা অনেক অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে। এবং পণ্যগ্রাফিতেও লিপ্ত হয় । তারা বিভিন্ন ইমেজ বিনিময় করতে পারে। যেটা তাদের জীবনী দীর্ঘকালিন প্রভাব ফেলতে পারে
।
দৈনন্দিন জীবনে মোবাইল ফোনের প্রভাব
আধুনিক যুগে মোবাইল ফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনেএকটি অপরিহার্য বিষয় হয়ে উঠেছে।মোবাইল ফোন ছাড়া আমরা আধুনিক জীবন যাপনের কথা ভাবতে পারিনা। মোবাইল ফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে আত্মপ্রত্যভাবে জড়িত। এই ডিভাইসটি আমাদের যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমরা বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে খুব সহজেই যোগাযোগ করতে পারি। এবং সহপাঠীদের সাথে খুব সহজেই আমরা যোগাযোগ করতে পারি। এছাড়া পরিবার বন্ধুবান্ধব সহকর্মী প্রিয়জনদের কাছে টেক্সট ভিডিও চ্যাট ইত্যাদি যেমন আমরা পাঠাতে পারি তেমনি গ্রহণ করতেও পারি খুব সহজেই।
তাই মোবাইল ফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে সহজ তোর ও ত্বরান্বিত করতেছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের উপর মোবাইল ফোনের যেমন সুপ্রভাব রয়েছে তেমনি কু প্রভাব রয়েছে অনেক। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে আমরা শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় তেমনি আর্থিক দিক থেকেও ক্ষতিগ্রস্ত হই।
অনেক ছেলেমেয়েরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পর্নোগ্রাফির দিকে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়া বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হচ্ছে। ফলে তাদের ভবিষ্যৎ জীবন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা
আধুনিক বিজ্ঞানী গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়ী প্রায় প্রতিটা পরিবারেই মোবাইল ফোন রয়েছে। এবং পরিবারের প্রতিটি সদস্যই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকেন। দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন প্রয়োজনে আমরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করি। বিশেষ করে ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনে ব্যবহার অনিবার্য। এই ডিভাইস ব্যবহার করে ছাত্র-ছাত্রীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইনে ক্লাস করে থাকে এবং বিভিন্ন টিউটর নিয়ে থাকে।
তবে মোবাইলের যেমন অনেক ভালো দিক রয়েছে তেমনি অতিরিক্ত ও অহেতুক মোবাইল এর ব্যবহার আমাদের অনেক ক্ষতি করতেছে। ছাত্র ছাত্রীরা মোবাইলের উপর আসক্ত হয়ে পড়তেছে এবং পড়াশোনা থেকে ছিটকে যাচ্ছে। এতে তাদের ভবিষ্যৎ জীবন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।
লেখকের বক্তব্য
আমি আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে। মোবাইল ফোনে বিভিন্ন দিক তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। মোবাইল ফোনের যেমন অনেক সুবিধা রয়েছে তেমনি অসুবিধা রয়েছে অনেক। আমাদেরকে মোবাইল ফোনে ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। প্রাপ্তবয়স্ক ছাড়া বিশেষ করে শিশুরা যেন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে না পারে সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।যদি আমার এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকে বা কোন উপকারে আসে ।তাহলে আপনাদের প্রতিবেশী বন্ধু-বান্ধব এবং নিকট আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে শেয়ার করবেন।এবং এই পেজটিতে ফলো দিয়ে রাখবেন ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url