কোন কোন খাবারে ভিটামিন এ রয়েছে
প্রিয় পাঠক, আসসালামু আলাইকুম, আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি। আজকে আমি আলোচনা করব কোন কোন খাবারে ভিটামিন এ রয়েছে এবং এই ভিটামিনযুক্ত খাবারের নাম সম্পর্কে।
আপনি যদি এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকেন আশা করি তাহলে পুরো তথ্যটি পেয়ে যাবেন। আমরা জানি ভিটামিন এ চোখের জন্য খুবই উপকারী এছাড়াও ত্বকের জন্য খুব উপকারে আসে। আমরা প্রতিদিন যে খাবারগুলো গ্রহণ করি এ খাবার গুলোর মধ্যে থেকে ভিটামিন এ পেতে পারি।
কোন কোন খাবারে ভিটামিন এ রয়েছে
প্রতিদিন আমরা বিভিন্ন ধরনের খাবার গ্রহণ করে থাকি কিন্তু আমরা জানি না যে কোন কোন খাবারে ভিটামিন এ রয়েছে। প্রিয় পাঠক,তাই আজ আমি কোন কোন খাবারে ভিটামিন এ রয়েছে এগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশাল্লাহ। নিম্নে এই খাবারগুলোর একটি তালিকা দেয়া হলোঃ
প্রতিটি খাবারের পাশের সংখ্যাটি রেটিনাল ইকুইভ্যালেন্ট বা আর ই যা প্রতি ১০০গ্রাম খাদ্য প্রাপ্ত ভিটামিন এ এর পরিমাণ নির্দেশ করে)
বিভিন্ন প্রকার শাক
- কালো কচু শাক-২০০০
- হেলেঞ্চা শাক-১৩৬৮
- সজনি পাতা-১২৫৭
- পুঁইশাক-১২৪০
- লাউ শাক-১১৯৯
- ধনিয়া পাতা-১১৫৩
- পাট শাক-১১৫৩
- লাল শাক-১০৫৫
- থানকুনি পাতা-১০১৭
- ডাটা শাক -১০০০
- পালং শাক-৯২২
- মিষ্টি আলু শাক -৮৬৩
- মুলা শাক-৬৬১
- সরিষা শাক -৪৩৭
- কলমি শাক -৩৩০
- বাথুয়া শাক -২৯০
- বাটি শাক-২৯০
- পুদিনা শাক -২৭০
- বিভিন্ন প্রকার সবজি-
- মিষ্টি কুমড়া-১২০০
- গাজর-১০০০
- মিষ্টি আলু -৩০২
- সজিনা -১২৫
বিভিন্ন প্রকার ফল
- পাকা আম-১৩৮৩
- পাকা কাঁঠাল -৭৮৩
- পাকা পেঁপে-১২৫
- প্রাণিজ খাবারঃ
- খাসির কলিজা -১৪১৪০
- মলা ও ঢেলা মাছ -১৯৬০ুএবং৯৩৭
- হাঁসের ডিম -৩৬৯
- মুরগির ডিম -২৭০
- মুরগির মাংস -২৪৩
বয়স অনুযায়ী প্রতিদিন ভিটামিন এ গ্রহণের প্রয়োজনীয় পরিমাণ
- শিশু (৬-৫৯ মাস)৩৫০-৪০০ আর ই
- গর্ভবতী মহিলা -৪০০ আর ই
- প্রসূতি মা -৮৫০ আর ই
বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি
- গাজর
- কুমড়া
- মিষ্টি আলু
- টমেটো
- লালমরিচ
- মাছ
- পালং শাক
- ব্রকলি
- আম
- কচুর শাক
- সজিনা পাতা
- লাউ শাক
- পাট শাক
- মোল্লা শাক
- কলমি শাক
- মুরগির ডিম
- খাসির কলিজা
- হাঁসের ডিম ইত্যাদি
গাজর
ভিটামিন এ এর একটি অন্যতম উৎস হচ্ছে গাজর। গাজারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। গাজর একজন মানুষের ভিটামিন এ এর গড় চাহিদার প্রায় ৩৩৪ শতাংশ পর্যন্ত পূরণ করতে পারে।
কুমড়াঃকুমড়াতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। একজন মানুষ যদি প্রতিদিন ১০০ গ্রাম করে কুমড়ো খায় তাহলে তার শরীরে ভিটামিন এ এর চাহিদার ১৭০ শতাংশ পর্যন্ত পূরণ হতে পারে।
মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলু ভিটামিন এ এর অন্যতম উৎস। একজন মানুষের ভিটামিন এ এর চাহিদার ৪৩৮শতাংশ পর্যন্ত পূরণ করতে সক্ষম মিষ্টি আলু। এছাড়াও ত্বকের কোষের জন্য এটি একটি খুবই কার্যকরী একটি ভিটামিন।
টমেটো
টমেটোতে ভিটামিন এ এর পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে মিনারেল ও রয়েছে। আপনি যদি একটি মাঝারি সাইজের টমেটো খান তাহলে আপনার শরীরে ভিটামিনের প্রায় ২০ শতাংশ পূরণ করতে সক্ষম হবে।
সবুজ শাকসবজি
বিভিন্ন ধরনের রঙ্গিন শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। তাছাড়া সবুজ শাকসবজিতে ভিটামিন এ এর পাশাপাশি ভিটামিন সি ক্যালসিয়াম ও আয়রন থাকে।
লাল মরিচ
লাল মরিচে ভিটামিন এ রয়েছে। এছাড়াও লাল মরিচে রয়েছে ক্যারোটিনয়েডস ও অক্সিডেন্ট। আপনি যদি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় লাল মরিচ রাখেন তাহলে আপনার শরীলে ভিটামিন এ এর চাহিদার ৪২ শতাংশ পর্যন্ত পূরণ হতে পারে।
তাই প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। আমরা যদি প্রতিদিন ভিটামিন এ যুক্ত খাবার গুলো গ্রহণ করে থাকি তাহলে রাতকানা রোগ সহ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এ জনিত রোগ বালাই থেকে আমাদের শরীর সুরক্ষিত থাকবে।
ভিটামিন এ এর অভাবে কি কি রোগ হয়
প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আমরা জানলাম কোন কোন খাবারে ভিটামিন এ থাকে। বা কোন কোন খাবার ভিটামিন এ সমৃদ্ধ। এখন আমরা জানবো ভিটামিন এ এর অভাবে কি কি রোগ হতে পারে। তাই আসুন দেরি না করে জেনে নেই ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগ সম্পর্কে।
রক্তস্বল্পতা
শরীরে ভিটামিন এ এর অভাবে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। যার ফলে অ্যানিমিয়ার মত রোগ হতে পারে। তাই এ রোগ থেকে বাঁচতে আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ভিটামিন এ যুক্ত খাবার রাখতে হবে।
ত্বকের সমস্যা
ত্বক ভালো রাখতে ভিটামিন এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ভিটামিন এ এর অভাবে ত্বক শুষ্ক রুখ হয়ে যেতে পারে। মুখে বিভিন্ন ধরনের দাগ ছোপ এবং বলে রেখে দেখা দিতে পারেঃ
ক্যান্সারের ঝুঁকি
ক্যান্সারে ঝুঁকি কমাতে ভিটামিন এ এর কোন বিকল্প নেই। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে মানুষের শরীরে স্কিন ক্যান্সার ও টিউমার ভিটামিন এ এর ঘাটতি জনিত কারণে হয়ে থাকে।তাই অবশ্যই আমাদের প্রতিদিন ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে।
রাতকানা রোগ
ভিটামিন এ এর অভাবে রাতকানা রোগ হয়ে থাকে। রাতকানা রোগ হলে রোগী দিনের বেলায় স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে পারে। কিন্তু রাতে তেমন একটা দেখতে পায় না আবার অনেকেই আছে যে একেবারেই দেখতে পাই না। তাই চোখ ভালো রাখতে এবং চোখের যত্ন নিতে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
ভিটামিন এ এর উপকারিতা কি কি
আমাদের শরীরে যখন ভিটামিন এ এর অভাব দেখা দেয় তখন আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে মানুষ বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তাই আমাদের শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। একজন মানুষের শরীরে প্রতিদিন কতটুকু ভিটামিন এ গ্রহণ করতে হবে তা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। আমাদের প্রতিদিনের খাবারে একজন পূর্ণবয়স্ক নারীর জন্য ৭০০ মাইক্রগ্রাম ভিটামিন এ থাকতে হবে। তাছাড়াও একজন পূর্ণবয়স্ক পুরুষের জন্য ৯০ মাইক্রগ্রাম ভিটামিন এ থাকা প্রয়োজন।
প্রিয় পাঠক, আসুন জেনে নেয়া যাক ভিটামিন এ এর উপকারিতা গুলো কি কি বা আমাদের শরীরে কি কি উপকার করে থাকে।
- ভিটামিন এ চোখ ভালো রাখতে এবং দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
- ভিটামিন এ শরীরের কোষ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে
- আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করে
- ত্বক উজ্জ্বল রাখার পাশাপাশি ক্যান্সার ও টিউমারের মত রোগের ঝুকি কমায়
- এছাড়াও দাঁত, ত্বক, অস্থি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ভিটামিন এ
শেষ কথা
আমাদের শরীরে ভিটামিনএ থাকা খুব জরুরি।কারন আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে বিভিন্ন ভিটামিনের প্রয়োজন হয়।আমরা দৈন্দিন যে খাবার গ্রহণ করে থাকি এই খাবারে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন থাকে।কিন্তু আমরা অনেকেই জনিনা যে কোন কোন খাবারে ভিটামিন এ রয়েছে।আজ আমি আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে কোন কোন খাবারে ভিটামিন এ রয়েছে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।আশাকরি এতক্ষনে এই বিষয় সর্ম্পকে জানতে পেরেছেন।এবং এই গুলো বাস্তব জীবনে কাজে লাগালে উপকৃত হবেন।যদি উপকৃত হন তাহলে এই পোষ্টী আপনার আপন জনদের কাছে শেয়ার করে দিবেন যাতে তারাও উপকৃত হতে পারে।এবং আপনাদের কোন মতামত থাকলে কমেন্টে জানিয় জাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url